নিরামিষ

নিরামিষের দিন রান্না নিয়ে চিন্তা? ঝটপট বানিয়ে ফেলুন দুর্দান্ত স্বাদের সয়াবিন মুইঠ্যা, সাবাড় হয়ে যাবে এক থালা ভাত

বাড়িতে নিরামিষ রান্না হলেই বাড়ির লোকজনদের যেন মুখভার হয়ে যায়। নিরামিষের দিন রান্না নিয়ে ঝক্কিও পোহাতে হয় গৃহকর্ত্রীকে। নিরামিষ অথচ সুস্বাদু রান্না মুখে তুলে দিতে হবে সকলের, নাহলে সেদিনের মতো হয়ত ঠিক খাওয়াই হবে না কারোর।

কিন্তু নিরামিষ কী রান্না করা যায়, তা নিয়ে বেশ মাথা খাটাতে হয়। কারণ মাছ, মাংস দিয়ে তো যে কোনও লোভনীয় খাবার বানানোই যায়। কিন্তু বিষয়টা যখন নিরামিষের তাহলে তা নিয়ে চিন্তায় তো পড়তেই হবে। আরও কোনও চিন্তা নেই। এবার নিরামিষের দিন সয়াবিনের একটা দুর্দান্ত রেসিপি রান্না করে তুলে ধরুন পরিবারের লোকদের সামনে। দেখুন তো খাবারের প্লেট সাফ হয়ে যায় কী না! তাহলে আর দেরি কীসের, এখনই বানিয়ে ফেলুন সয়াবিনের মুইঠ্যা।

তাহলে দেখে নেওয়া যাক এই সয়াবিনের মুইঠ্যা বানাতে কী কী উপকরণ লাগবে-

উপকরণঃ
সয়াবিন
বেসন
আদা কাঁচালঙ্কা বাটা
টম্যাটো
আলু
জিরে গুঁড়ো
ধনে গুঁড়ো
হলুদ গুঁড়ো
শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো
কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো
নুন স্বাদমতো
চিনি
তেজপাতা
ছোটো এলাচ ও দারচিনি
গোটা জিরে
এক চিমটে হিং
ঘি
গরমমশলা
তেল

প্রণালীঃ
প্রথমে সয়াবিনগুলোকে ধুয়ে গরম জলে ভালো করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট গরম জলে সেদ্ধ করা হয়ে গেলে সয়াবিনগুলো ছেঁকে তা ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। এরপর সয়াবিনগুলো চিপে তা থেকে ভালোভাবে জল ঝরিয়ে নিতে হবে যাতে কোনওভাবেই তাতে জল না থাকে।

এরপর সয়াবিনগুলোকে একটু ঝরঝরে করে বেটে নিন। একেবারে মিহি করে বাটবেন না তাতে স্বাদ ভালো হবে না। ওই সয়াবিন বাটার মধ্যে এবার হলুদ, নুন, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, অল্প লঙ্কা গুঁড়ো দিন। এরপর মিশ্রণটা একটু শক্ত হওয়ার জন্য বেসন দিয়ে তা ভালোভাবে মেখে নিন। দেখবেন যাতে মিশ্রণটা একটু আঁটসাঁট হয়। এরপর ওই মিশ্রন থেকে ছোটো ছোটো করে অংশ নিয়ে তা হাতের মুঠোয় চাপ দিয়ে মুইঠ্যা আকারে গড়ে নিন। ডিম্বাকৃতি আকারও দিতে পারে। মুইঠ্যা গড়া হয়ে গেলে কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে মুইঠ্যাগুলো এক এক করে তেলে দিয়ে ভালোভাবে লাল লাল করে ভেজে নিন। তবে সাবধানে কারণ মুইঠ্যা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

মুইঠ্যা ভাজা হয়ে গেলে তা তেল থেকে তুলে নিয়ে ওই তেলের মধ্যেই লম্বা লম্বা টুকরো করে রাখা আলু ভেজে নিন। ভাজার সময় আলুতে সামান্য নুন ও হলুদ দিন। আলু ভালোভাবে লাল করে ভেজে তুলে রাখুন। এবার কড়াইয়ে অল্প তেল দিয়ে তার মধ্যে তেজপাতা, গোটা জিরে, ছোটো এলাচ ও দারচিনি ফোঁড়ন দিন। সামান্য একটু হিং ফোঁড়নও দিন। নিরামিষ রান্নায় হিং ভালো লাগে। এরপর তেলের মধ্যে আদা কাঁচালঙ্কা বাটা দিন। সামান্য ভেজে নিয়ে তাতে টুকরো করে রাখা টম্যাটো দিয়ে দিন। একটু জল দিয়ে সব গুঁড়ো মশলাগুলো একে একে দিন। ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো, কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো (রঙের জন্য), হলুদ, স্বাদমতো নুন, সামান্য চিনি দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিন তেল না ছাড়া পর্যন্ত।

মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে তাতে ভেজে রাখা আলুর টুকরো গুলো দিয়ে গরম জল দিন যাতে আলুগুলো মোটামুটি ডুবে থাকে। এরপর জল ফুটে গেলে তা কম আঁচে চাপা দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ঝোলের মধ্যে ভেজে রাখা মুইঠ্যাগুলো দিয়ে আরও ৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখুন। এতে মশলা ভালোভাবে মুইঠ্যার মধ্যে ঢুকে যাবে। ঢাকনা খুলে আঁচ একটু বাড়ান। যদি কম গ্রেভি রাখতে চান তাহলে একটু জল শুকিয়ে নিন।

এরপর রান্নায় অল্প গরমমশলা ও এক চামচ ঘি দিয়ে মিশিয়ে আঁচ বন্ধ করে রান্না কিছুক্ষণের জন্য চাপা দিয়ে রাখুন। তাতে ঘি, গরমমশলার স্বাদ রান্নায় ভালোভাবে মিশবে। এরপর রান্না সার্ভিং ডিশে ঢেলে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। এই রান্নাটা কিন্তু রুটি বা পরোটা সহযোগেও খুব ভালো লাগবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button